সম্প্রতি যত রোমান্টিক সিনেমা এসেছে তার মধ্যে এই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত তেলেগু ছবি 'সীতা রামম ' সেরা দের তালিকায় থাকবে। ছবির পরিচালক হনু রাঘবপুরি , মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মৃনাল ঠাকুর, দুলেকার সালমান , রশ্মিকা মান্ধানা, সচিন খেরকার , তরুণ ভাস্কর, যীশু সেনগুপ্ত প্রমুখ।
ছবির মূল প্রেক্ষাপট ১৯৬৪ সালের যা ১৯৮৫ সালের একটি অনুসন্ধান এর ঘটনার মধ্যে দিয়ে সেটা তুলে ধরা হয়েছে। আফরীন নামের একটি বদমেজাজি পাকিস্তানী মেয়ে যে লন্ডনএ তার গ্রাজুয়েশন করছে হঠাৎ একদিন পাকিস্তানের পতাকা জ্বালানোর প্রতিবাদে আনন্দ মেহতা নামের একজন ভারতীয় লোকহিতৈষীর ব্যক্তির গাড়ি জ্বলিয়ে দেয় এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ তাকে ১ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয় অথবা সেই ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কিন্তু শত্রু দেশের কাছে ক্ষমা চাইবে না বলে সেই টাকা চাইতে সে পাকিস্তানে তার দাদু ব্রিগেডিয়ার আবু তারেক এর কাছে ফিরে আসে কিন্তু সে জানতে পারে তার দাদু মারা গেছে। তার দাদুর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সেনার লিউটেনান্ট রামের লেখা একটি চিঠি সীতা মহালক্ষ্মীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে তবেই সে তার দাদুর সম্পত্তির থেকে টাকা পাবে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে ভারতে আসে ও তার সিনিয়র বালাজির সাথে সীতা মহালক্ষ্মীর খোঁজে বেড়োয়। আফরীন জানতে পারে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানী জঙ্গি গোষ্ঠীর নেতা আনসারীর কাশ্মীরে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার চক্রান্ত ব্যর্থ করে লিউটেন্ট রাম ও তার সঙ্গীরা এবং সেই সময় ভারতীয় সেনাদের নিয়ে খবর ও উচ্ছাস এর মাঝে জানা যায় লিউটেনান্ট রাম একজন অনাথ ' তার কোনো পরিবার নেই। তার পরেই তার কাছে পুরো দেশ থেকে তাকে ভালোবেসে প্রচুর মানুষ চিঠি লেখেন এই চিঠির মাঝেই একটি চিঠি আসে 'সীতা মহালক্ষ্মীর' যে বলে সে রামের স্ত্রী। এই চিঠি মজার ছলে হলেও এখন থেকেই শুরু হয় রাম সীতার প্রেম কাহিনী এবং রাম সীতাকে খুঁজতে চলে হায়দরাবাদ। রাম বুঝতে পারে কাশ্মীরএ দাঙ্গার সময় সে সীতাকেই বাঁচিয়েছিলো। এই সীতা মহালক্ষ্মী আসলে ছিলেন প্রিন্সেস নূরজাহান যা রামও হয়তো জানতেন কিন্তু তার কাছে সে সীতাই থেকে গেছেন।
রামের চরিত্রে দুলেকার সালমান অনবদ্য এবং মৃনাল ঠাকুর হয়তো ভবিষ্যতে আরো ছবি করবেন কিন্তু অনেকের কাছে তিনি সীতা মহালক্ষ্মীই থেকে যাবেন। রশ্মিকার মান্ধানার অভিনয় নিরাশ করেনা তবে উচ্ছসিত হওয়ার মতোও না। যীশু সেনগুপ্ত অল্প সময়ের জন্য পর্দায় ছিলেন তবে তিনি তার মতোই সাবলীল। সচিন খেরেকার প্রমুখ নিজ নিজ চরিত্রে নিজেদের সেরা দিয়েছেন।
ছবির কিছু দিক যেটা ঠিক বাস্তবের সাথে মেলে না তা হলো পাকিস্তান আর্মির মানবিক দিক এবং কাশ্মীরের ঘটনা যা একটু বেশি সতর্ক ভাবে দেখানো হয়েছে তবে এগুলো কোনোটাই ছবির মুখ্য বিষয় নয়। ছবির মূল গল্পে ছবির নির্মাতারা সম্পূর্ণ সফল।
রেটিং - ৮.৫/১০
0 Comments